Monday, July 14, 2008

সিডনিতে প্রতীতির বর্ষবরণ ১৪১৫

সিডনিতে বরাবরই বেশ জাঁক-জমক ভাবেই নববর্ষ পালন করা হয়। প্রতি বছরের মত এবারও সিডনির এ্যাশফিল্ড পার্ক এর বটমূলে বাংলার নতুন বছর কে বরণ করে নিল প্রতীতি। প্রতীতি সিডনির একটি সংগীত গোষ্ঠি। বাংলাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সিরাজুস সালেকিন, যিনি পরিচালনা করছেন এবং নিজ হাতে গড়েছেন এই গানের গোষ্ঠি, যার অন্য পরিচয় প্রখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী ও ভাষা দিবস গানের রচয়িতা ও সুরকার মরহুম আবদুল লতিফ এর ছেলে। প্রতীতির বর্ষবরণ উৎসব বাংলাদেশের বৈশাখী মেলার মতই হইচই আনন্দে ভরপুর হলেও একটু ভিন্নধর্মী।

যারা সিডনির বাইরে আছেন তাদের জন্য এ্যাশফিল্ড পার্ক এর বৈশিষ্টটা বলে রাখছি। রমনা বটমূলের মতই এখানেও বহুপুরানো অনেক গাছের সমাবেশ রয়েছে। ভাষা শহীদের স্মরণে এই পার্কে একটি শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যেখানে প্রতিবছর শহীদ দিবস পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানের দিন ভোর ৪টা-৫টা থেকে মাঠ আর মঞ্চের সাজসজ্যা, সাউন্ড ব্যালেনস সুরু করা হয় এবং ঠিক ৯.৩০ এ অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। অনুষ্ঠান শুরু হয় সরদ এবং ভৈরবী রাগ দিয়ে। হালকা শীতের সকালে, মাঠে গাছের নিচে প্রতীতির বর্ষবরণের গান প্রবাসী বাঙালীদের কিছুক্ষণের জন্য মনে করিয়ে দেয় রমনার বটমুল, বৈশাখের আমেজ, নববর্ষের আনন্দ।

প্রতীতির গান ও কবিতা পাঠের আসরের পাশাপাশি অনুষ্ঠানের অন্য আকর্ষণ হল প্রতি বছর প্রতীতি একজন কে বেছেনেন ঐ বছরের "সেরা বাঙালি" হিসেবে যাকে অনুষ্ঠানের দিন পুরস্কৃত করা হয়। তাছারাও উপস্থিত দর্শকদের মাঝে বেছে নেয়া হয় "সেরা বাঙালী সাজ" এর একজন নারী ও পুরুষকে। ছোট ছোট শিশুদের জন্যও ছিল গল্প শোনার আসর।

আমার জানামতে সিডনির এই এ্যাশফিল্ড পার্কেই একমাত্র ছায়ানটের মত প্রতীতি এভাবে নববর্ষ পালন করে। পরবর্তী প্রজন্মদের বাংলা সংস্কৃতি বুঝতে এবং ধরে রাখতে সাহায্য করার জন্যই প্রবাসে প্রতীতির এমন আয়োজন। আমরা যারা দেশের বাইরে বড় হয়েছি, হচ্ছি, যারা কখনও দেশে বৈশাখী মেলা দেখিনি বা রমনার বটমূলে গান শুনতে যায়নি তারা প্রতীতির অনুষ্ঠানে সেই বৈশাখি আমেজ অনুভব করতে পারি।

No comments: